শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৮ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
জগন্নাথপুরে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার জগন্নাথপুরে কিশোরকন্ঠ মেধাবৃত্তি -২৪ সম্পন্ন জগন্নাথপুরে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে জনশক্তি সমাবেশ জগন্নাথপুর প্রেসক্লাবের সদস্য সংগ্রহ শুরু জগন্নাথপুরে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভা জগন্নাথপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত জগন্নাথপুরে যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা বার্ষিকী উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প সুনামগঞ্জে পিপি, অ্যাডিশনাল ও এপিপি নিযুক্ত হলেন জগন্নাথপুরের তিন প্রথিতযশা আইনজীবী জগন্নাথপুরে আজ থেকে এক মাসব্যাপী এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু জগন্নাথপুর ও শান্তিগন্জ্ঞ বাসীর সেবা করতে চাই; বিশাল সম্বর্ধনায় বিএনপি নেতা কয়ছর আহমদ

জগন্নাথপুরে পাকা ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক : শ্রমিক সংকট

জগন্নাথপুরে পাকা ধান নিয়ে বিপাকে কৃষক : শ্রমিক সংকট

সানোয়ার হাসান সুনু ::
মহামারি করোনা ভাইরাস আতঙ্কে লকডাউনের ফলে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে গত ৪ দিন ধরে ঘুর্ণিঝড়, শিলা বৃষ্টি আর প্রবল বজ্রপাতে দিশেহারা সুনামগঞ্জের কৃষকরা।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কৃষকরা জমিতে পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী ঝড়ের ফলে মাঠের ফসল নিয়ে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। সোমবার উপজেলার নলুয়ার হাওর ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের শঙ্কার কথা জানা গেছে।
কৃষকরা জানান, গত ৪দিন ধরে উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি কৃষকদের পাকা ধানের অনেক ক্ষতি করেছে। অনেক স্থানে জমির পাকা ধান ঝরে গেছে। নলুয়া হাওরপাড়ের ভূরাখালি গ্রামের কৃষক সিদ্দিকুর রহমান জানান, রোববার গভীর রাতের কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে হালকা শিলা বৃষ্টির কারণে কিছু জমির পাকা ফসলের ক্ষতি হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে কৃষি শ্রমিক না আসায় তারা পাকা ফসল কাটতে পারছেন না। নলুয়া হাওরের পূর্ব পাড়ের হিজলা গ্রামের দুদু মিয়া জানান, ১২ কেদার জমি করেছি (৩০ শতকে ১ কেদার) জমির অধিকাংশ ধান পেকে গেলেও এবার নাইয়া (ধান কাটার শ্রমিক) না আসায় ধান কাটতে পারছিনা। তবে শ্রমিক না ফেলে নিজেরাই কাটা শুরু করব।
উপজেলার মইহাওরের পাড়ের বাগময়না নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক নুরুল হক জানান তিনি এবার ২৪ কেদার জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। কিন্তু শ্রমিক না থাকায় ধান কাটতে পারছেন না। তবে তিনি প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে সিলেটের কানাইঘাট থেকে শ্রমিক আনার চেষ্টা করছেন।
নলুয়া হাওরপাড়ের বেতাউকা গ্রামের আব্দুল মফিজ মেম্বার জানান, হাওরের অধিকাংশ জমির ফসল পাকতে শুরু করেছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে অন্য জেলা থেকে কৃষি শ্রমিকরা না আসায় কৃষকরা পাকা ধান নিয়ে চিন্তিত। এছাড়াও গত কয়েক দিনের কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি কৃষকদের শঙ্কায় ফেলেছে।
মইহাওরেরপূর্ব পাড়ের কৃষক হারুন মিয়া তালুকদার সোমবার যুগান্তরকে জানান, এবার তিনি ৫২ কেদার জমিতে বোরো ফসল চাষাবাদ করেছেন। ফসল ভালো হয়েছে এবং অধিকাংশ জমির ধানই পেকে গেছে। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে সিলেটের কানাইঘাট থেকে ধান কাটার শ্রমিক এনেছি। আজ থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তিনি জানান তাদেরকে আলাদা ঘরে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায় এবার উপজেলার বৃহত হাওর নলুয়া ও মইসহ ছোটবড় ১৫ টি হাওরে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ করা হয়। সব থেকে বেশি ধান আবাদ করা হয়েছে নলুয়া ও মই হাওরে।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুম মঙ্গলবার যুগান্তরকে জানান, আবহাওয়া অধিদপ্তরের বন্যার আশংকার পূর্বাভাসের প্রেক্ষিতে আজ উপজেলা জুড়ে দ্রুত ধান কেটে ফেলতে মাইকিং করে কৃষকদের অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি জানান প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে বাহির থেকে শ্রমিক আনা যাবে। তবে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে তাদের কে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে প্রতি বছরের মতো এবার অন্য জেলার কৃষি শ্রমিক না আসায় পাকা ধান নিয়ে অনেক কৃষক দুশ্চিন্তায় আছেন। এছাড়াও কালবৈশাখী ঝড়, আগাম বন্যা, শিলাবৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের চিন্তায় কৃষকরা চিন্তিত। তিনি ধান পাকার সঙ্গে সঙ্গেতা কেটে ফেলতে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
ছবি ক্যাপশন: নলুয়া হাওরের পশ্চিমপ্রান্তের বোরো ফসলের পাকা ধান কাটছেন শ্রমিকরা

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published.

© All rights reserved © 2017-2023 Jagannathpurnews.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com